ভগবানের কথা (Bhogobaner Kotha)
Author: কৃষ্ণকৃপাশ্রীমূর্তি শ্রীল অভয়চরণারবিন্দ ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ
Description
পরমেশ্বর ভগবান শ্রীমদ্ভগবদ্গীতায় এই জড় জগত্কে দুঃখালয়মশাশ্বতম্ বলে বর্ণনা করেছেন। অর্থাত্, এই জগত্ হচ্ছে দুঃখের আগার এবং তা অনিত্য। প্রথমত, জন্ম-মৃত্যু-জড়া-ব্যাধি রূপ কঠিন ক্লেশের দ্বারা আমরা সবসময় পর্যুদস্ত। মাতৃগর্ভে দীর্ঘ দশ মাস অবস্থানকালে সংকীর্ণ পরিসরে নানাপ্রকার জ্বালা-যন্ত্রণা ভোগ করার পর যদি বা জটিল জন্ম-প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সেই অবস্থা থেকে রেহাই পাওয়া যায়, তারপরই শুরু হয় আরও কঠিনতর ও দীর্ঘতর সংগ্রাম। দেবতাদের দ্বারা, পারিপার্শ্বিক অন্যান্য জীবেদের দ্বারা ও নিজেদের মন ও দেহ থেকে উদ্ভূত ক্লেশের দ্বারা আমরা নিরন্তর কষ্ট পেতে থাকি। শারীরিক, মানসিক, প্রাকৃতিক, সামাজিক, আর্থিক প্রভৃতি নানারকম বিড়ম্বনার দ্বারা আমরা অতিষ্ঠ হয়ে উঠি। তার মধ্যে যদি বা কেউ পুণ্য কর্ম বশত কিছু স্বাচ্ছন্দ্যময় জীবন লাভও করে, তা এই জগতের অনিত্যতা হেতু দীর্ঘদিন ধরে রাখতে পারে না; হয় দুর্ভাগ্যের শিকার হয়ে বা মৃত্যুর কারণে সেই স্বাচ্ছন্দ্যময় জীবন থেকে বঞ্চিত হয়। এ সবের মধ্যেই আবার এসে পড়ে জড়া বা বার্ধক্যের মত কঠিন ও জটিল পরিস্থিতি, যা মানুষের কাছে জীবনটাকেই করে তোলে অর্থহীন। তখন মানুষ মৃত্যুকেই অধিক শ্রেয় বলে বরণ করে নিতে চায়। এই হচ্ছে জীবের এই জড় জগতে অবস্থানের কাহিনী, যাকে শাস্ত্রে ‘ভবরোগ’ বলে বর্ণনা করা হয়েছে। আর এর কখনই পরিসমাপ্তি ঘটে না; বারবার চক্রাকারে এই জন্ম-মৃত্যু-জরা-ব্যাধি রূপ দুঃখময় কাহিনীর পুনরাবৃত্তি ঘটতে থাকে, যদি না আমরা এই চরম সমস্যার মূল কারণ সম্বন্ধে অবগত হয়ে তার সমাধান করার জন্য সচেষ্ট হই। এই সমস্যার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে শাস্ত্রে বলা হয়েছে যে, ভগবত্-বৈমুখ্যতা বা আসুরিক প্রবৃত্তিই এর মূল কারণ। এই সম্বন্ধে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিশ্লেষণ করে শ্রীল প্রভুপাদ এই “ভগবানের কথা” গ্রন্থে শাস্ত্রীয় সিদ্ধান্ত অনুসারে অব্যর্থ ও সুনির্দিষ্ট সমাধান প্রদান করেছেন, যা অবলম্বন করলে দুঃখময় জড় জগতের বন্ধনে আবদ্ধ মানুষ তথা জীবকুল যে অনায়াসে উত্তীর্ণ হতে পারবে, সে বিষয়ে কোন সংশয় নেই।
Sample Audio